চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার
চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার সম্পর্কে আজকে এই আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করা
হবে। একটা মানুষের সুন্দর্য ফুটে উঠে তার চুলের মাধ্যমে। তাই আমরা সবাই চাই
আমাদের চুল অনেক ঘন মজবুত ও কালো ঝকমলে হোক। তাই চুলের যত্নে কারি পাতা
ব্যবহারের উপকারিতা সম্পর্কে তুলে ধরবো।
কারি পাতা আমাদের চুলের গোড়া শক্ত মজবুত করতে সাহায্য করে। এটি
ব্যবহারে মাধ্যমে স্বাস্থকর চুল বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। চুলের স্বাস্থ্য বজায়
রাখতে কারি পাতার গুরুত্ব অনেক।আজকে এই পোস্টটি-তে কারি পাতার ব্যবহার সম্পর্কে
বিস্তারিত আলোচনা করতে যাচ্ছি।
পেজ সূচিপত্রঃ চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার উপকার
- চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার
- চুলের যত্নে কারি পাতা ব্যবহার করার নিয়মগুলো
- কারি পাতা ব্যবহারে মাথার স্বাস্থ্যের উন্নতি
- কারি পাতা ব্যবহার করে কিভাবে চুল লম্বা করা যায়
- ঘন কালো চুল গেতে খাদ্য তালিকায় কারি পাতা যোগ করুন
- কারি পাতা ব্যবহারে গজাবে নতুন চুল ও খুশকি দূর
- কারি পাতা কোথায় পাওয়া যায়
- শেষ কথা -চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার
চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার
চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহারের গুরুত্ব অপরিসীম। কারন কারি পাতা
বিভিন্ন পুষ্টিগুন সমৃদ্ধ, এটি ব্যবহারে আমাদের চুলের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান
করে থাকে।কারন কারি পাতার মধ্যে রয়েছে এন্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন
'বি' এবং প্রোটিনের সমৃদ্ধ উৎস যা চুলকে শক্তিশালী করে ও চুলের
বৃদ্ধিতে সাহায্যে করে।আবার এটি ব্যবহারের মাধ্যমে অকালে চুল পাকা হওয়ার হাত
থেকে রক্ষা করে। চুলে কারি পাতার ব্যবহারে স্বাস্থ্যকর চুল এবং চুলকে দেখতে
অনেক সুন্দর করে।
কারি পাতা ব্যবহারে মাথার চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে আবার তার পাশাপাশি মাথার
খুশকি দূর করে।কারি পাতা মাথার চুলে বিভিন্ন ভাবে ব্যবহার করতে পারবেন।যেমনঃ
কারি পাতা তেল বানিয়ে, কারি পাতা পেস্ট বানিয়ে ব্যবহার এবং কারি পাতা গুড়ো করো
খেয়ে উপকার পাওয়া যায়।নিয়মিত কারি পাতার তেল ও পেস্ট ব্যবহার করলে আমাদের চুলের
সৌন্দর্য এবং চেহারায় সৌন্দর্যা বাড়ায়। এটি ব্যবহারে চুল পড়া কমাতে সাহায্য
করে।
আরো পড়ুনঃ
প্রতিদিন ৪ হাজার টাকা ইনকাম করার সহজ উপায়?
চুলের যত্নে কারি পাতা ব্যবহার করার নিয়মগুলো
চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার করার নিয়ম সম্পর্কে অনেকে জানতে চেয়ে থাকে। আমি
আজকে আপনাদের চুলের কারি পাতা ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে জানাবো।এর মাধ্যমে আপনি
আপনার চুলের যত্নে নিতে পারবেন এমনকি নিজেই নিজের চুল দেখে তার হাতে নাতে
প্রমাণ পাবেন।
সুন্দর স্বাস্থ্যকর ও ঘন ঘন চুল আমাদের সকলেই পছন্দ। স্বাস্থ্যকর ও ঘন ঘন চুল
পেতে হলে নিয়মিত চুলের যত্ন করতে হবে। কারি পাতাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে
ক্যালসিয়াম,আয়রন ও ফসফরাসের মতো উপাদান যা চুলের পুষ্টি জোগাতে সাহায্য করে। এই
উপাদানের কারনে চুলের ঘনত্ব বৃদ্ধি ও চুল পড়া থেকে বাচাঁয় । চলুন এবার আমরা
চুলে কারি পাতা ব্যবহার করার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করা যাক।
হেয়ার মাস্ক হিসাবেঃ
প্রথমে একটি পাএে এক থেকে দুই মুঠো কারি পাতা নেন।এরপর সেই পাএে ৩-৪ টেবিল চামচ
টক দই মিশিয়ে নেন।তারপর সুন্দর করে কারি পাতা ও টক দই কে ভালো ভাবে
ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নেন যেন যন হয়ে যায়। এরপর এই হেয়ার মাস্কটি আপনি আপনার
চুলে গোড়ায় ভালোভাবে মেখে বা লাগিয়ে নিবেন। এরপর ৩০ মিনিট অপেক্ষা
করুন। তারপরে ধুয়ে শ্যাম্পু করে নিন। এভাবে নিয়মিত সপ্তাহে ২-৩ বার
ব্যবহার করতে পারেন।
হেয়ার টনিক হিসাবেঃ
প্রথমে আপনি একটি পাএে নারিকেল তেল নিন এবং সেই পাএটি হালকা করে গরম করে
নিন।এরপর একটু গরম থাকা
১-২ মুঠো কারি পাতা মেশান এবং খেয়াল করবেন কিছু সময় পর তেলের রং
বদলাবে। তারপর চুলার আঁচ বন্ধ করে পাএটি নামিয়ে নেন এবং ঠান্ডা হওয়া পর্যন্ত
অপেক্ষা করুন। ঠান্ডা হয়ে গেলে তেল টি ছেঁকে নিন।তারপর একটি কাচের
বোতলে তেলটি ঢেলে ব্যবহার করতে পারবেন। আপনি এই তেলটি সপ্তাহে দুই বার মাথায়
ঢেলে নিয়ে মেসেজ করে তারপর ১ ঘন্টা পর শ্যাম্পু করে নিন। এভাবে ব্যবহার করতে
পারেন।
পেঁয়াজ ও কারি পাতাঃ
চুল পড়া কমাতে পেঁয়াজ অনেক গুরুত্বপূর্ণ। পেঁয়াজে রয়েছে সালফার, পটাশিয়াম ও
অ্যান্টিঅক্সিজেন যা চুলের গোড়া অনেক শক্ত ও চুল পড়া কমাতে
সাহায্য করে। আর এই পেঁয়াজ ও কারি পাতা মিশ্রণে অকালে পড়া হাত থেকে বাঁচাবে
এবং চুল পাকা থেকে বাঁচাবে।কারি পাতা আর পেঁয়াজের রস ভালো করে পেস্ট করে চুলে
৪০-৪৫ মিনিট লাগিয়ে রাখুন। তারপর শ্যাম্পু করে নিন। এভাবে আপনি এটি
ব্যবহার করতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ
চুল পড়া কমাতে পেঁয়াজের তেল উপকারিতা
কারি পাতা ব্যবহারে মাথার স্বাস্থ্যের উন্নতি
সাধারণত স্বাস্থ্যকর চুলের বৃদ্ধি সবসময় স্বাস্থ্যকর ত্বক দিয়ে শুরু হয়ে থাকে।
কারি পাতাতে আছে অ্যান্টিফাঙ্গাল,অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি
বিশিষ্টগুলো যা চুলের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। এটি মাথার রক্ত চলাচলে
উন্নতি করে যা চুলের বৃদ্ধির জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে।তার পাশাপাশি
চুলের ঘনত্ব বাড়াতে সাহায্য করে থাকে।কারি পাতা নিয়মিত ব্যবহারে মাথার চলের
স্বাস্থ্য উন্নতি ও চুলের ঘনত্ব বাড়াতে সহায়তা করে থাকে।
কারি পাতা ব্যবহার করে কিভাবে চুল লম্বা করা যায়
আমরা অনেকে জানি না কারি পাতা কিভাবে ব্যবহার করলে চুলকে লম্বা করা যায়। আর
লম্বা, ঘন ও ঝকঝকে ঝলমলে চুল কে না চাই বলুন তো? আপনি যদি লম্বা, ঘন ও ঝলমলে চুল
করতে চান তাহলে কারি পাতার এই আয়ুর্বেদিক মিশ্রণটি ব্যবহার করতে পারেন।এটি
নিয়মিত ব্যবহারে প্রাকৃতিক লম্বা করে তেমনি চুল পড়া কমাতে বিশেষ ভূমিকা
পালন করে। তাহলে চলুন এবার চুলের যত্নে আয়ুর্বেদিক মিশ্রণটি সম্পর্কে জানা যাক-
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
- কারি পাতা
- বিটের খোসা
- আমলকি
- এক টুকরো আদা ও
- পানি
কিভাবে এটি মিশ্রণ করবেন ও ব্যবহার করবেঃ
- প্রথমে আপনি বিট থেকে খোসা ছাড়িয়ে খোসাগুলোকে টুকরো টুকরো করে কেঁটে নিন।
- এরপর কেঁটে রাখা বিটের খোসা সাথে একমুঠো কারি পাতা,আমলকি, এক টুকরো আদা ও পরিমাণ মতো পানি মিশিয়ে একসাথে ব্লেন্ডারে ভালো করে ব্লেন্ড করে পেস্ট তৈরি করে নিন।
- ব্যাস মিশ্রণটি তৈরি হয়ে গেলে একটি ছাঁকনি বা পরিষ্কার পাতলা কাপড় দিয়ে ছেঁকে নিন। এরপর আপনি এই মিশ্রণটি মাথার চুলের গোড়ায় লাগান এবং ১ ঘন্টা পর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলেন।
আপনি যদি কারি পাতা, আমলকি ও বিটের মিশ্রণ টি যদি নিয়মিত ব্যবহার
করেন তাহলে আপনার মাথার চুল লম্বা ও ঝলমলে তার পাশাপাশি চুলের গোড়া শক্ত মজবুত
করবে।
ঘন কালো চুল গেতে খাদ্য তালিকায় কারি পাতা যোগ করুন
আপনি যদি ঘন কালো চুল চান তাহলে খাদ্য তালিকায় যোগ করুন কারি পাতা।
কারণ আপনি দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় যা যা খাবার গ্রহণ করবেন তা শরীরে মধ্যে
আপনার চুল ও গ্রহণ করে থাকে।
চুল ঝরে পড়া ও ঘন কালো চুল গেতে আপনাকে প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় কারি পাতা রাখতে
হবে। আপনি আপনার রোজকার খাবারের সাথে কিভাবে কারি পাতা খাবেন তা জেনে নেই-
- কারি পাতা রোদে শুকিয়ে শুকনো করে গুড়ো করে পাউডার করে আপনি তরকারি সাথে খেতে পারেন আবার পানি সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন।
- এছাড়া আপনি পুদিনা পাতা কুচি কুচি করে কেঁটে কারি পাতা সাথে মিশ্রণ করে দুধের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন।
- আবার আপনি কারি পাতা ভেজে নিয়ে বিভিন্ন তরকারির বা সবজির মধ্যে মিশিয়ে খেতে পারেন। এভাবে আপনি যদি নিয়মিত প্রতিদিন খাবারের সাথে খেতে থাকেন এতে আপনার শরীরে অনেক উপকার হবে পাশাপাশি আপনার ঘন কালো চুল হতে সহায়তা করবে।
কারি পাতা ব্যবহারে গজাবে নতুন চুল ও খুশকি দূর
আদিমকাল থেকে চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহারে হয়ে আসছে।কারি পাতাকে ঔষধ বলে
বিবেচনা করা হয়।এটি রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন। এই পাতার উপকার সম্পর্কে যদি
যদি সবাই জানতে পারবো তাহলে সবাই এই কারি পাতা ব্যবহার করতো।এই পাতার মাধ্যমে
বিভিন্ন ধরনের রোগ-বালাই থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এই পাতা আমাদের সকলের জন্য
অনেক উপকারী।
নতুন চুল গজাতেঃকারি পাতায় আছে প্রচুর পুষ্টি ও ভিটামিন এ ভরপুর। এক মুঠো কারি
পাতা বেটে তা পেঁয়াজ রস মিশিয়ে একসাথে আপনার মাথার চুলে ভালো করে লাগিয়ে
৪০-৪৫ মিনিট রাখুন। তারপর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিন।এটি ব্যবহারে আপনার মাথার চুল
পড়া বন্ধ করবে ও চুলের গোড়া শক্ত মজবুত করবে আবার নতুন চুল গজাতে সাহায্য
করবে।
খুশকি দূর করতেঃ কারি পাতাতে রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান।যা মাথার
চুলের খুশকি দূর করতে সাহায্য করে। কারি পাতা ও টক দই একসাথে মিশিয়ে পাটাটে বেটে
নিয়ে মিশ্রণ টি মাথায় মেসেজ করে ৩০-৩৫ মিনিট রেখে দিন তারপর পানি দিয়ে ধুয়ে
ফেলুন।এতো আপনার মাথায় কোন খুশকি জন্মাতে বাঁধা দিবে।
কারি পাতা কোথায় পাওয়া যায়
সাধারণত কারি পাতা সব জায়গায় বা এলাকায় পাওয়া যায় না। এটি বাজারে বা মসলার
দোকানগুলোতে পাওয়া যায়। এছাড়া আপনি চাইলে যে কোন নার্সারি থেকেও সংগ্রহ করে
নিতে পারেন।আবার সংগ্রহ করে তা আপনার বাসার টপে বা বাগানে লাগাতে পারেন। আর
আপনি কারি পাতা চাষ করে অনেক উপকার পাবেন। এর মধ্যে আছে বিভিন্ন ঔষধের গুণ।
যা আমাদের জন্য অনেক প্রয়োজন।এছাড়াও কারি পাতার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের
রোগ-বালায়ের চিকিৎসা হয়ে থাকে।
আরো পড়ুনঃ
ক্রিপ্টোকারেন্সি মাধ্যমে কোটিপতি?
শেষ কথা -চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার
চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার সম্পর্কে আজকের এই পোস্ট টিতে বিস্তারিত আলোচনা
করা হয়েছে। কারি পাতা ব্যবহার আমাদের জীবনে কতটা উপকার তা সম্পর্কে সমস্ত
কথা আলোচনা করা হয়েছে। বিশেষ করে চুলের যত্নে কারি পাতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমরা
সকলে চাই আমাদের চুল অনেক সুন্দর ও সুস্থ থাকুক।সুন্দর ও সুস্থ চুল পেতে কারি
পাতা ব্যবহার সম্পর্কে উপরে নিয়ম অনুসরণ বা মেনে ব্যবহার করলে আপনি অনেক উপকার
পাবেন।
আশা করি আজকের এই পোস্ট টি পড়ে আপনাদের সবার উপকার হবে।যদি পোস্ট টি পড়ে আপনার
কাছে ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই শেয়ার করতে ভুলবেন না।

মর্ডান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url